একজন সোবহান আহমেদ এবং একটি দীর্ঘশ্বাসের গল্প!

অবসর জীবন এতোটা দুর্বিষহ হয়ে উঠবে তা কল্পনাও করতে পারেননি সোবহান আহমেদ। ভেবেছিলেন চাকরি থেকে অবসর নিয়ে পরিবারের সাথে সুখে শান্তিতে সময় কাটাবেন । সারা জীবন ব্যয় করেছেন সংসারের জন্য। নিজের জন্য আলাদা ভাবার সময় ছিল না তার। স্ত্রীকে নিয়ে একা ঘুরেও আসতে পারেননি কোথাও । ছেলে মেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়েছেন, জীবনের সব উপার্জন ব্যয় করেছেন সন্তানদের ভালোর জন্য। সহায় সম্পত্তি যা কিছু করেছেন, সবকিছু লিখে দিয়েছেন ৩ সন্তানদের মধ্যে। অনেকেই বুদ্ধি দিয়েছিলো নিজেদের জন্য কিছু রেখে দিতে। কারো কথাই গ্রাহ্য হয়নি তার। ছেলেমেয়েরা তো আছেই। ওরা থাকতে জীবন নিয়ে এতো টেনশন করার কী আছে।
বাসার বারান্দায় সকাল সকাল দেখতে দেখতে চায়ের কাপে চুমুক দেয়ার ফাঁকে বিগত জীবনের কথা ভাবছিলেন সোবহান আহমেদ। কতশত স্মৃতি এসে ভিড় করে সোবহান আহমেদের ভাবনায়। স্ত্রীর ডাকে ভাবনায় ছেদ পড়ে। মন না চাইলেও উঠতে হবে তাকে। ধুত বলে বিরক্তি নিয়ে উঠে দাঁড়ান তিনি। কেবলই নাতিনাতনিকে স্কুলে দিয়ে এসে বারান্দায় বসেছেন সকাল দেখবেন বলে। সোবহান আহমেদ শিওর এখন স্ত্রীর সামনে গেলেই স্ত্রী তার হাতে বাজারের ব্যাগ ধরিয়ে দেবেন। ‘না, এই মহিলাটাকে নিয়ে আর পারা গেলো না! সংসার ছাড়া আর কিছুই বুঝলো না মহিলাটা।’ স্ত্রীকে দোষ দিতে গিয়ে একটু দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন সোবহান আহমেদ। সংসারের ভরণপোষণ করতে গিয়ে নিজেও তো সময় দিতে পারেননি স্ত্রীকে! আর স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রীও সংসারের কাজে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আজকাল এতো চিন্তা হয় স্ত্রীকে নিয়ে। বারান্দা থেকে রান্নাঘরের সামনে এসে দাঁড়ান সোবহান আহমেদ। রান্না নিয়ে স্ত্রীর তোড়জোড় অবলোকন করতে থাকেন। স্ত্রীর জন্য হঠাৎ নিজের ভিতরে চাপা কষ্ট অনুভব করেন। এখনো না হয় তিনি পাশে আছেন, কিন্তু যখন থাকবেন না, সবকিছু ঠিকঠাক সামলে নিতে পারবে তো!
বাজারের ব্যাগ নিয়ে বের হওয়ার পথে বড় ছেলের সাথে দেখা হয় সোবহান আহমেদের। ছেলে অফিসে যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেল বের করছিলো। ছেলে বাবাকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নেয়। ছেলের পিছনে বসে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে নিজের অফিস জীবনের কথা মনে পড়ে সোবহান সাহেবের। নিজেকে যেমন সংসারের জন্য হাড়ভাঙা খাটুনি করতে হয়েছিলো, ছেলেটাও এখন তাই। ছেলের ক্লান্তি মুখের দিকে তাকিয়ে বেদনা অনুভব করেন তিনি। চাকরি থেকে অবসর নিলেও ছেলের সাথে নিজেও যদি সংসারে কিছুটা কন্ট্রিবিউট করতে পারতেন, সেই ভাবনা সারাক্ষণ তাড়া করে ফেরে তাকে। চাকরি করেছেন একটা বেসরকারি অফিসে। সরকারি চাকরি করলে না হয়, পেনশন টাকা দিয়ে কন্ট্রিবিউট করা যেত; কিন্তু দেশের বেশিরভাগ বেসরকারি চাকরিতে তো সেই ব্যবস্থা নেই।
ছেলের ডাকে ঘোর ভাঙে সোবহান আহমেদের। বাবাকে বাজারে নামিয়ে দিয়ে ছেলে অফিসের দিকে রওনা দেয়। ছেলের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকেন তিনি। অজান্তেই একটা বিশাল দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে ভিতর থেকে। শেষ জীবনে এসে এই প্রথম একটা পেনশন প্ল্যান না করার জন্য আফসোস হয় সোবহান আহমেদের। নিজের স্ত্রী, ছেলেমেয়েদের সুরক্ষিত ভবিষ্যতের ভাবনা পেয়ে বসে তাকে। নিজের অসহায়ত্বকে অনুভব করে চমকে ওঠেন তিনি। উদ্ভ্রান্তের মতো ব্যাগভর্তি বাজার নিয়ে বাসায় ফেরেন তিনি।
আমরা চাই না কর্মজীবন থেকে অবসর নেয়ার পর সোবহান সাহেবের মতো দীর্ঘশ্বাস আপনাকেও ফেলতে হোক। বিস্তারিত জেনে নিন “গার্ডিয়ান পেনশন প্ল্যান” সম্পর্কে এবং আপনার মূল্যবান বিবেচনা সাপেক্ষে পলিসিহোল্ডার হয়ে নিশ্চিত করুন নিরাপদ ভবিষ্যৎ।
গার্ডিয়ান পেনশন প্ল্যানঃ
• নির্দিষ্ট পরিমাণ পেনশন
• ১০ বছর পর্যন্ত গ্যারান্টিড বেনিফিট
• আমৃত্যু পেনশন সুবিধা
• কর্মজীবনে মৃত্যু হলে নমিনি ১০ বছরের পেনশন অ্যামাউন্ট একসাথে পাবে
“গার্ডিয়ান পেনশন প্ল্যান” সম্পর্কে বিস্তারিত কথা বলুন আমাদের কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধির সাথে ১৬৬২২ নাম্বারে।